পৃষ্ঠাসমূহ

Notice:

Comming Soon

সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১২

অবশেষে অন্য পাশে বেলা বোস

অঞ্জন দত্তের বিখ্যাত গান, ‘এটা কি ২৪৪১১৩৯?’ গানটি শুনে আমরা জানতে পেরেছি ফোনের ওপাশে থাকা বেলা বোসকে অঞ্জন দত্ত কী বলেছিলেন। কিন্তু বেলা বোস উত্তরে কী বলেছিলেন, সেটা কি কেউ জানে? এত দিন জানত না কেউ। এবার বেলা বোসের অপ্রকাশিত উত্তরগুলো ফাঁস করে দিচ্ছেন আলিম আল রাজি

বেলা বোস বলেছিলেন
চাকরিটা ওগো পেতেই পারো তুমি
তবুও তোমায় বানাব না যে স্বামী
সম্বন্ধটা ভাঙব কেন, কিসের এত ঠ্যাকা?
চাকরি পেলেও তোমার বাপের আছেই বা কয় ট্যাকা?
স্টার্টিংয়ে ওরা ১১০০ দিক, আমার কী হলো তাতে?
চাইনিজে যেতে ২২০০ লাগে, মরতে চাই না ভাতে।
চুপ কর গাধা মাফ কর মোরে
দে ছেড়ে দে লাইন।
হ্যাঁ, এটাই ২৪৪১১৩৯
বেলা বোস আমি, শুনতে পাচ্ছি ফাইন।
মিটার বাড়ুক তোমার পাবলিক টেলিফোনে
মোবাইল তো আর পারবে না দিতে কিনে।
স্বপ্নের আমি গুষ্টি কিলাই শুনো।
এত দিন ধরে আমি মরি মরি।
রাস্তার কোনো সস্তা হোটেলে
বদ্ধ কেবিনে বন্দী দুজনে
তুমি শুধু টানতে কেবল বিড়ি।
প্রতিদিন আমি বিল দিয়েছি পারব না দিতে আর।
জঞ্জাল ভরা মিথ্যা শহরে হবে না
তোমার আমার টানাটানির সংসার।
চুপ করে তুমি কাঁদছ ফুঁপিয়ে।
ভালো একটা মেয়ে দেখে করে ফেলো এবার বিয়ে।
মরে গেলেও তোমার কাবিনে করব না আমি সাইন।
হ্যাঁ, এটাই ২৪৪১১৩৯।

অঞ্জন দত্ত বলেছিলেন
চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছ
এখন আর কেউ আটকাতে পারবে না
সম্বন্ধটা এবার তুমি ভেস্তে দিতে পারো
মা-কে বলে দাও বিয়ে তুমি করছ না
চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা সত্যি
আর মাত্র কয়েকটা মাস ব্যস
স্টার্টিংয়েই ওরা ১১০০ দেবে তিন মাস পরে কনফার্ম
চুপ করে কেন বেলা কিছু বলছ না
এটা কি ২৪৪১১৩৯
বেলা বোস তুমি পারছ কি শুনতে
১০-১২ বার রং নাম্বার পেরিয়ে তোমাকে
পেয়েছি দেব না কিছুতেই আর হারাতে
হ্যালো ২৪৪১১৩৯ দিন না ডেকে বেলাকে
একটিবার মিটারে যাচ্ছে বেড়ে পাবলিক
টেলিফোনে জরুরি খুব জরুরি দরকার
স্বপ্ন এবার হয়ে যাবে বেলা সত্যি
এত দিন ধরে এত অপেক্ষা
রাস্তার কত সস্তা হোটেলে বদ্ধ্ত কেবিনে বন্দী
দুজনে রুদ্ধশ্বাস কত প্রতীক্ষা
আর কিছুদিন তারপর বেলা মুক্তি
কসবার ওই নীল দেয়ালের ঘর
সাদা-কালো এই জঞ্জালে ভরা মিথ্যে কথার শহরে
তোমার আমার লাল-নীল সংসার
চুপ করে কেন একি বেলা তুমি কাঁদছ
চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি সত্যি
কান্নাকাটির হল্লাহাটির সময় গেছে পেরিয়ে
হ্যালো তুমি শুনতে পাচ্ছ কি
হ্যালো ধুর ছাই হ্যালো
এটা কি ২৪৪১১৩৯?

উৎস: রস+আলো, প্রথম আলো
ভালো লাগার বিষয়গুলোর প্রচার ও প্রসারের জন্যই কপি-পেস্ট ট্যাগটি

শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০১১

না কবিতা::: কালের আবর্তে আমি

কোন একদিন, তুমি আমার কথা না শুনলে
অস্থির হতে, আমাকে না দেখলে তুমি
জ্ঞান হারাতে;
আর আজ, তুমি স্বস্তি পাও,
অমোঘ আনন্দে ডুবে থাকো
আমার নিখোঁজ সংবাদে-

এইতো সেদিন, আমি চার কিংবা পাঁচটি শব্দ
এলো মেলো ভাবে সাজালেই-
তোমার কাছে সেটা কবিতা মনে হত
চেষ্ঠা করতে তুমি, খুঁজে পেতে
কোন নিগুড় বানী,
যেটা আমার নিজেরও ছিল অজানা;
এখন আমি বানী দিতে চাই কবিতায়,
কিন্তু তোমার মতে, এই সব ছাই পাশে
কিস্যু হবার নয়.....

আমার নির্জনবাসকে আখ্যায়িত করেছিলে
দার্শনিকগুনে গুনান্বিত করে;
এটা নাকি মানসিক ব্যাধি ছাড়া কিছুই নয়
কালের আবর্তে তোমার ভাষ্য মতে--

চোখ দুটি করেছিলে ফোলাটে
শুধু কেঁদে কেঁদে,আসবে বলে কাছে;
এখনও চোখ দুটি ফোলাটে তোমার
আমাকে ছেড়ে যাবার আনন্দে
দিন রাত ঘুমিয়ে থেকে!!

এখন আমায় ভাবো না তুমি
জানি স্মৃতিকে করে রেখেছ মমি-
তারপরেও জেনো, আছি তোমার মাঝে
ছিলাম আগে সাদা, এখন হয়ত কালটে।।।।।।।।

মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১১

তোমাকে, তুমি বলা হয় নি

তোমাকে কখনও আমার -তুমি বল হয়নি
তুমি বলেছ সবসময়‍‍‍---
আমি যে পাইনি সাহস
এখন আমি বুঝি, তোমার ঠোঠ দুটি ছিল কাঙাল
পেতে এই ভীরুর কম্পিত পরশ।

কত যে করেছি আলোচনা
খুঁটিনাটি সব বিষয়ে আমার,
সব কিছু চুপচাপ সহে যেতে তুমি
ভাবতে কখন বলি--
কাংখিত কথাটি তোমার।।

তুমি যেতে চেয়েছিলে
শহর থেকে অনেকদূরে,আমার হাত ধরে
বুঝতে পারিনি সেদিন
সবই নিয়েছিলাম রসিকতার ছলে।

অলস সময় করেছি কত পার
শুধু তোমার কথা শুনে--
আমি নয় বোকা ছিলাম
কেন তুমি দাও নি বুঝিয়ে আমায়
বার বার কেন তোমার পাশে যেতাম?

তুমি ভালো বুঝতে আমায়,
বুঝেছোও বটে কানায় কানায়
বাকী ছিল শুধু একটু খানি--
বাকীটুকু কি সত্যি বুঝতে পার নি!
না বুঝলেও আমার মত, এখন বুঝবে
সেটা আমি ভালো করেই জানি--

কোন দিন আর কি দেখা হবে?
হয়তবা না; যদিও তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছা করে
তখন বলবে আমাকে, এখন যদি তুমি আমাকে ভাব
সত্যি করে বলবে সেদিন
আমি হয়ত সেদিনও বোবায় রব--
শুধু তোমার কথা শুনব বলে।।।।

শনিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১১

তোমার বিলুপ্তির দর্শক হব

হৃদয়ের সবুজ চারন ভূমি,
তোমার প্রাত ভ্রমনের পথ;
মুখে লেগে থাকা হাসির নীচে
লুকিয়ে রাখা গরম নিশ্বাস-
আমার মুখমন্ডল ছুয়েছে বহুবার।

বসন্ত ফুলেরা স্বাগত জানিয়েছিল
তেমার ছন্দযুক্ত হাঁটাকে,
শিশির বিন্দু কোন ভুল করেনি
ধৌত করাতে তোমার পা দুটোকে।
আমার মনের লাগামহীন ঘোড়াতে
তুমি কতনা ঘুড়েছো এদিক ওদিক-

আমার অনুভূতিগুলো আচ্ছন্ন হয়ে ছিল
ওভাবে তোমাকে পাবার সাফল্যর স্বাদে;
রক্তক্ষরিত ক্লান্ত হৃদয় সেদিনও জানায়নি
তোমাকে আমার সন্তাপ গুলোকে।
সব উপেক্ষা করে অধরযুগল
তোমার ডাগর চোখে বুলিয়েছিল ছোঁয়া-

সবুজ চারণভূমি হল ধূসর,
সময়ের সাথে সাথে-
তোমারও হয়নি দেরী, পেয়েছ নতুন সবুজ
হয়তবা পরেছো নতুন কোন মুকুট-
তোমার নতুন শিকার কোন রাজপুত্রের।

হ্যাঁ প্রিয়তমা, এখন আমি
একাকীই হাঁটি মাঠের সবখানটা-
মাঠের ধূলারা আমার চোখে আঁছরে পরে
ওরা আমাকে যন্ত্রণা দেয়, আরো কত কিছু-
ভেবোনা আমি কখনও কাঁদি;
জানি আমি, কাঁদতে নেই যার তার জন্য।

নেমেসিস স্বান্তনা দেয়, বলে অপেক্ষার কথা
তোমার পরিণতির জন্য;
ওকে আমি কথা দিয়েছি
তোমার বিলুপ্তির দর্শক হব বলে।।।

বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১০

অসমাপ্ত

খালেদ সাহেব স্বপ্মেও ভাবতেও পারেনি, তাকে কোন একদিন এরকম কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।শুধুমাত্র এই অবস্হার সামনে সে দাড়াতে ভয় পাবে বলেই, ১৮ বৎসর আগে সে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেছিল। কিন্তু আসলে সে পালাতে পারিনি, এটাই আজ প্রমানিত।এখন সে বুঝতে পারছে না এই বিপদ থেকে নিস্তার পাবে কি করে।তার পরেও সে তার সামনে দাড়িয়ে থাকা ছেলেটার সাথে কথা চালিয়ে যাচ্ছে, তাকে বিভিন্ন ভাবে প্রশ্ন করছে। খালেদ এতটাই দ্বিধান্বিত যে সে তার প্রশ্নগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারছে না, এমনও হচ্ছে যে একই প্রশ্ন বারবার করছে, ১ঘন্টা হতে গেলেও ছেলেটাকে বসতে বলাটাও হয়নি।

খালেদ কেনই বা এই ছেলেকে নিজের সন্তান বলে পরিচয় দিতে যাবে।বিনামেঘে বজ্রপাত সহ্য করা যায়, কিন্তু এরকম মিথ্যা দাবী কে মেনে নেবে। কোন পাগলের পক্ষেও সেটা সম্ভবপর না।

ছেলেটার সাথে কথা বলতে বলতে খালেদ বার বার মনে করছে তার ১৮ বৎসর আগের সেই ঘটনাটি।এমন কোন দিন নেই যেদিন ঘটনাটি তাকে পীড়া দেয়নি। সেদিন কোনমতে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেছিল, কিন্তু আজ।

তখন কোনমতে পড়াশোনাটা শেষ করেই সদ্যপিতৃবিয়োগের কারণে একটি চাকরী খুব দরকার ছিল।কারণ সেই মূহুর্তে সে ছাড়া তার সংসারে কেউ ছিল না হাল ধরার মত। চাকুরী পছন্দ করার মত ও কোন অবকাশ পায়নি।পরীক্ষার ফল বের হবার আগেই সে একটি এনজিও সে যোগদান করে। এনজিওটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য কাজ করত, এবং তার প্রথম পোস্টিং হল শহর থেকে অনেক দূরে এক মফস্বলে।পরিবার থেকে দূরে না থাকতে চাইলেও কি আর করা, তাকে চলে যেতে হল মা ও একমাত্র বোনের মায়া ছেড়ে।

চাকুরীতে নিজের যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য তার বদ্ধপরিকর মানসিকতা চাকুরীর নির্ধারিত মানসিকতা প্রকাশের পাশাপাশি তার জন্মসূত্রে পাওয়া বৈশিষ্ঠ্য ও গুনাবলী প্রকাশ করতে বাধ্য করেছিল। এজন্য অফিস টাইমের পরও সে সময় দিত তার নির্ধারিত মানুষ গুলোর পিছনে।যেচেযেচে সে শুনতো সবার কথা, কাউকে টাকা পযসা দিযে সাহায্য করতে না পারলেও সুন্দর পরামর্শ আর মিষ্ঠি হাসি দিতে সে কাউকেই কৃপনতা করেনি। অল্প সময়ের মর্ধ্যেই সবার সাথে সে গড়ে তুলেছিল এক আন্তরিক সম্পর্ক। সবাই তাকে মনে করত তাদের নিজেদের মানুষ। সেই সুবাদে সবাই তাদের মনের কথা খুলে বলত তার কাছে। জীবনযুদ্ধে পরাজিত মানুষ গুলোর কাছে সে ছিল স্বান্ত্বনার আশ্রয়। মানুষের সাথে তার এই সম্পর্ক প্রভাব ফেলেছিল তার চাকুরীর উপরও। অতিঅল্পদিনর মধ্যেই তার প্রমোশন হল, সাথে সাথে হল তার স্বপ্নপূরন‌‌ ‌, নিজ শহরেই বদলী। ৭ দিনের মধ্যেই তাকে নতুন জায়গাতে জয়েন করতে হবে। তার এই খুশী হাবার পাশাপাশি একটি কষ্ঠও তার মনে দানা বেধেছিল। মানুষের সাথে সম্পর্কের অভিনয় যে তখন শুধু অভিনয় নেই সে সেটা খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারছিল।আর তার মনে একটি ভয়ও কাজ করছিল, এত লোকের ভালবাসা ও শ্রদ্ধা সম্মানকে সে কিভাবে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে।

হুটকরে মানুষগুলোকে চমকায়ে দিয়ে চলে যাবার থেকে, আস্তেআস্তে মানুষ গুলোকে বিদায়বানী শুনিয়ে বোঝাতে চাচ্ছিল সে আর বেশীদিন নেই তাদের মাঝে। কিন্তু তার একথা অতিদ্রুত সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ল, তাদের প্রিয় মানুষটা আর বেশীতিন নেই তাদের মাঝে। প্রথম শুনতে পেয়ে প্রতিটা মানুষেরই মাথায় যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত হবার মতই, কেউই কখন ভাবতে পারেনি কখনও খালেদ সাহেব তাদের ছেড়ে চলে যাবে।কথাটা যে ই যখন শুনেছে তখনই ছুটে এসেছে তার কাছে কথার সত্যতা যাছাই করার জন্য। কিন্তু কেউই খুশী হয়ে ফিরতে পারেনি, সবাইকেই ফিরতে হয়েছে ব্যর্থ মনরথে।আর যাবার সময় বলে গেছে তাদের কথা যেন সে কখনও না ভুলে যায়, কিংবা যাবার আগে যেন নিদেন পক্ষে একবার দুটো ডালভাত যেন খেযে যাই তাদের বাড়ী থেকে।

সবারই দেখা করে যাওয়া তার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়নি। যে মানুষগুলো তাকে এত ভালবাসে তারা যে এটা করবে এটাই নিয়ম। কিন্তু সে চমকে গেছিল ঐ মেয়েটির আগমনের জন্য। তখন খালেদ সারাদিনের ব্যস্ততা ঘুচিয়ে রাতের খাবারের জন্য তৈরী হচ্ছিল।কিন্তু মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে তার পিলে চমকানোর মত অবস্হা। খালেদ অনেকটা অপ্রস্তুত হয়েই তাকে বলল

-আপনারতো এখানে আসার কথা নয়
-না এসে কি করি বলুন,পাড়ার সবাই একে একে আসছে। আপনি নয় কখনও আমার কোন উপকারের জন্য আমার বাসায় যাননি, যদিও পাড়াতে এমন কেন বাড়ী নেই যেখানে আপনি যাননি। কিন্তু আমিতো আপনার মত ভুল করতে পারি না। নয় আপনি উপকারটা আমাকে সেধে না ই করলেন, আপনারতো চেয়ে নিতে কোন সমস্যা থাকার কথা নয়।

এটা আসলেই সত্য এখানে আসার পর থেকে সে সবসময়ই ঐ বাড়ীটা এড়িয়ে যেত, কারণতার অফিসের সহকর্মী থেকে শুরু করে পাড়ার সবাই তাকে সতর্ক করে দিয়েছিল বাড়ীটার ঐ মেয়েটির সম্পর্কে।খালেদ সেটাই করেছিল, কখনও ভুল করেও ঐ বাড়ীর দিকে কোন উত্সাহ দেখায়নি। আর এরই জন্য কখনও অফিসের কোন সুবিধা নিয়েও হাজির হয়নি ঐ বাড়ীতে, যদি পাছে লোকে কিছু বলে।কিন্তু আজ সমস্যাটা তার নিজের ঘরে এসে হাজির, তাও আবার এই রাতের অন্ধকারে।খালেদের মনে হচ্ছিল কূলে এসে তরী ডোবার মত বিপদসংকেত; যদি কেউ দেখে ফেলে তো সব শেষ।তবু মাথা ঠান্ডা রেখে খালেদ বলল

-হু, তো বলুন কি করতে পারি আমি?
-পাড়ার মানুষের মুখে যা শুনি, আপনার মত মানুষ নাকি খুব কম পাওয়া যায়।আপনি নাকি ফেরেশ্তার মত মানুষের উপকার করেন।আমারও একটা উপকার করতে হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে একটা পাপ করতে হবে।

-কিন্তু আমি তো আপনারমতো কারোর জন্য উপকারের করতে যেয়ে কোন পাপ করতে পারবো না। তবু বলুন, অন্তত জেনে রাখি আপনার কোন উপকারটা করতে পারলাম না।
-আমি জানি আপনি রাজী হবেন না, কিন্তু রাজী হউন আর নাই বা হউন আমাকেতো তা পেতেই হবে। আমি চাই আমার গর্ভে একটি সন্তান ধারন করতে একজন খুব ভালো মানুষের। যাকে নিয়ে আমি বেঁচে থাকতে চাই অমার মত করে।যদিও সন্তান গর্ভে নেওয়া আমার জন্য কোন ব্যাপারই না। কিন্তু আমি জানি আমি যাদের সন্তান খুব সহজে নিতে পারি তারা কোন মানুষের মধ্যে পড়ে না। আর আমি এমন কোন মানুষের সন্তান কে মাতৃস্নেহে বড় চাই না।

কথা গুলো শুনতে শুনতে খালেদের মাথায় যেন বজ্রপাত হবার মত অবস্হা। এমন কথা কোন মহিলা যে এতটা সহজে বলে ফেলতে পারে সেটা সে কখন ও ভাবেনি।আর তা শোনার জন্যও একজন পুরুষের যে মানসিকতার জোর লাগে তার কোনটাই ছিল না তার কাছে।

-আমি খুব দুঃখিত যে আমার পক্ষে ওরকম কোন উপকার করা সম্ভবপর নয়।
-আমি শুধুমাত্র একটি সন্তান চাই, কখনও তার পরিচয় আপনাকে দিতে হবে না। শুধুমাত্র একটি ভালো মানুষের সন্তান আমি গর্ভে নিতে চাই।
-এত ভালো মানুষ থাকতে আমার এই কাজটি করতে হবে কেন?
-আমি ভালোমানুষদের সম্পর্কে খুব কম জানি, কারণ তারা আমার কাছে আসে না। আমি মনুষের মুখেমুখে শুনে যতটা চিনেছি তাদের মধ্যে আপনি একজন।

খালেদের কথা গুলো শুনতে শুনতে ধৈর্য্যর বাঁধ যেন ভেঙ্গে যাচ্ছিল।তার মনে হচ্ছিল খারাপ ব্যবহার করে এর থেকে নিস্তার পাওয়া যাবেনা।
-দেখুন আমাকে মাফ করবেন। আপনি অনেককে পাবেন হয়ত তারা আপনার শর্ত মেনে নিবে। কিন্ত আমার পক্ষে সম্ভব নয়।আপনি বসতে পারেন। কেউ আপনাকে এখানে দেখে ফেললে আমার সম্মানের আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
-আপনি যে সম্মান রক্ষার চেষ্ঠা করছেন, আমাকে আমার প্রাপ্য না দিলে তা এমনিতেই আপনাকে হারাতে হবে।
-আপনি কি বলতে চাইছেন?
-আমাকে সন্তান দিলে, সেটা শুধুমাত্র আমি আর আপনিই জানবো, আমাদের সন্তান ও কোনদিন জানবে না। কিন্তু সেটা না হলে সবাই কে জানাবো, আপনিই আমাকে এখানে ডেকে পাঠিয়েছেন।এই চামেলী যেটা চায়, সেটা সে যেকোন ভাবেই পাবে।

সব কথা গুলো খালেদকে ধীরে ধীরে জ্ঞানহীন করে তুলছিল, সে ঠিক বুঝছিল না আসলে সে কি করতে পারে। অবশেষে চামেলীকে নিবৃত্ত করার জন্য সে বলল
-আমাকে একটু ভাবার সময় দিতে হবে।
-সেটা আমি দিতে পারি, তবে কোন না শোনার জন্য নয়। আমি আগামীকাল আবার আসব আমার প্রাপ্য বুঝে নিতে।
খালেদ কিছু বলার আগেই চামেলী বেড়িয়ে গেল। খালেদের ধাতস্হ হতে কিছু সময় লাগল। সে বুঝতে পারল এখানে থাকা আর নিজের বিপদকে নিমন্ত্রন করা একই কথা। সেই রাতেই সে রওনা দিল বাড়ীর উদ্দেশ্য।

কথা গুলো মনে হতে না হতেই,খালেদের সুখের ভুবনের প্রিয়তমা স্ত্রী হঠাত্ এসে বলল
-গতপরশু যারা নীলুকে দেখে গেল, ওরা ফোন দিয়েছে। তোমার সাথে কথা বলতে চায়।

খালেদের সামনে বসে থাকা ছেলেটকে দেখে বলল
-ও, তুমি ব্যস্ত বুঝি। ওদের তাহলে বলে দিই, তুমি পরে কথা বলবে।
খালেদ কোন কথা বলার আগেই, সে চলে গেল।খুব দ্রুত এসে বলল
-উনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না।