পৃষ্ঠাসমূহ

Notice:

Comming Soon

বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১০

অসমাপ্ত

খালেদ সাহেব স্বপ্মেও ভাবতেও পারেনি, তাকে কোন একদিন এরকম কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।শুধুমাত্র এই অবস্হার সামনে সে দাড়াতে ভয় পাবে বলেই, ১৮ বৎসর আগে সে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেছিল। কিন্তু আসলে সে পালাতে পারিনি, এটাই আজ প্রমানিত।এখন সে বুঝতে পারছে না এই বিপদ থেকে নিস্তার পাবে কি করে।তার পরেও সে তার সামনে দাড়িয়ে থাকা ছেলেটার সাথে কথা চালিয়ে যাচ্ছে, তাকে বিভিন্ন ভাবে প্রশ্ন করছে। খালেদ এতটাই দ্বিধান্বিত যে সে তার প্রশ্নগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারছে না, এমনও হচ্ছে যে একই প্রশ্ন বারবার করছে, ১ঘন্টা হতে গেলেও ছেলেটাকে বসতে বলাটাও হয়নি।

খালেদ কেনই বা এই ছেলেকে নিজের সন্তান বলে পরিচয় দিতে যাবে।বিনামেঘে বজ্রপাত সহ্য করা যায়, কিন্তু এরকম মিথ্যা দাবী কে মেনে নেবে। কোন পাগলের পক্ষেও সেটা সম্ভবপর না।

ছেলেটার সাথে কথা বলতে বলতে খালেদ বার বার মনে করছে তার ১৮ বৎসর আগের সেই ঘটনাটি।এমন কোন দিন নেই যেদিন ঘটনাটি তাকে পীড়া দেয়নি। সেদিন কোনমতে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেছিল, কিন্তু আজ।

তখন কোনমতে পড়াশোনাটা শেষ করেই সদ্যপিতৃবিয়োগের কারণে একটি চাকরী খুব দরকার ছিল।কারণ সেই মূহুর্তে সে ছাড়া তার সংসারে কেউ ছিল না হাল ধরার মত। চাকুরী পছন্দ করার মত ও কোন অবকাশ পায়নি।পরীক্ষার ফল বের হবার আগেই সে একটি এনজিও সে যোগদান করে। এনজিওটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য কাজ করত, এবং তার প্রথম পোস্টিং হল শহর থেকে অনেক দূরে এক মফস্বলে।পরিবার থেকে দূরে না থাকতে চাইলেও কি আর করা, তাকে চলে যেতে হল মা ও একমাত্র বোনের মায়া ছেড়ে।

চাকুরীতে নিজের যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য তার বদ্ধপরিকর মানসিকতা চাকুরীর নির্ধারিত মানসিকতা প্রকাশের পাশাপাশি তার জন্মসূত্রে পাওয়া বৈশিষ্ঠ্য ও গুনাবলী প্রকাশ করতে বাধ্য করেছিল। এজন্য অফিস টাইমের পরও সে সময় দিত তার নির্ধারিত মানুষ গুলোর পিছনে।যেচেযেচে সে শুনতো সবার কথা, কাউকে টাকা পযসা দিযে সাহায্য করতে না পারলেও সুন্দর পরামর্শ আর মিষ্ঠি হাসি দিতে সে কাউকেই কৃপনতা করেনি। অল্প সময়ের মর্ধ্যেই সবার সাথে সে গড়ে তুলেছিল এক আন্তরিক সম্পর্ক। সবাই তাকে মনে করত তাদের নিজেদের মানুষ। সেই সুবাদে সবাই তাদের মনের কথা খুলে বলত তার কাছে। জীবনযুদ্ধে পরাজিত মানুষ গুলোর কাছে সে ছিল স্বান্ত্বনার আশ্রয়। মানুষের সাথে তার এই সম্পর্ক প্রভাব ফেলেছিল তার চাকুরীর উপরও। অতিঅল্পদিনর মধ্যেই তার প্রমোশন হল, সাথে সাথে হল তার স্বপ্নপূরন‌‌ ‌, নিজ শহরেই বদলী। ৭ দিনের মধ্যেই তাকে নতুন জায়গাতে জয়েন করতে হবে। তার এই খুশী হাবার পাশাপাশি একটি কষ্ঠও তার মনে দানা বেধেছিল। মানুষের সাথে সম্পর্কের অভিনয় যে তখন শুধু অভিনয় নেই সে সেটা খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারছিল।আর তার মনে একটি ভয়ও কাজ করছিল, এত লোকের ভালবাসা ও শ্রদ্ধা সম্মানকে সে কিভাবে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে।

হুটকরে মানুষগুলোকে চমকায়ে দিয়ে চলে যাবার থেকে, আস্তেআস্তে মানুষ গুলোকে বিদায়বানী শুনিয়ে বোঝাতে চাচ্ছিল সে আর বেশীদিন নেই তাদের মাঝে। কিন্তু তার একথা অতিদ্রুত সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ল, তাদের প্রিয় মানুষটা আর বেশীতিন নেই তাদের মাঝে। প্রথম শুনতে পেয়ে প্রতিটা মানুষেরই মাথায় যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত হবার মতই, কেউই কখন ভাবতে পারেনি কখনও খালেদ সাহেব তাদের ছেড়ে চলে যাবে।কথাটা যে ই যখন শুনেছে তখনই ছুটে এসেছে তার কাছে কথার সত্যতা যাছাই করার জন্য। কিন্তু কেউই খুশী হয়ে ফিরতে পারেনি, সবাইকেই ফিরতে হয়েছে ব্যর্থ মনরথে।আর যাবার সময় বলে গেছে তাদের কথা যেন সে কখনও না ভুলে যায়, কিংবা যাবার আগে যেন নিদেন পক্ষে একবার দুটো ডালভাত যেন খেযে যাই তাদের বাড়ী থেকে।

সবারই দেখা করে যাওয়া তার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়নি। যে মানুষগুলো তাকে এত ভালবাসে তারা যে এটা করবে এটাই নিয়ম। কিন্তু সে চমকে গেছিল ঐ মেয়েটির আগমনের জন্য। তখন খালেদ সারাদিনের ব্যস্ততা ঘুচিয়ে রাতের খাবারের জন্য তৈরী হচ্ছিল।কিন্তু মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে তার পিলে চমকানোর মত অবস্হা। খালেদ অনেকটা অপ্রস্তুত হয়েই তাকে বলল

-আপনারতো এখানে আসার কথা নয়
-না এসে কি করি বলুন,পাড়ার সবাই একে একে আসছে। আপনি নয় কখনও আমার কোন উপকারের জন্য আমার বাসায় যাননি, যদিও পাড়াতে এমন কেন বাড়ী নেই যেখানে আপনি যাননি। কিন্তু আমিতো আপনার মত ভুল করতে পারি না। নয় আপনি উপকারটা আমাকে সেধে না ই করলেন, আপনারতো চেয়ে নিতে কোন সমস্যা থাকার কথা নয়।

এটা আসলেই সত্য এখানে আসার পর থেকে সে সবসময়ই ঐ বাড়ীটা এড়িয়ে যেত, কারণতার অফিসের সহকর্মী থেকে শুরু করে পাড়ার সবাই তাকে সতর্ক করে দিয়েছিল বাড়ীটার ঐ মেয়েটির সম্পর্কে।খালেদ সেটাই করেছিল, কখনও ভুল করেও ঐ বাড়ীর দিকে কোন উত্সাহ দেখায়নি। আর এরই জন্য কখনও অফিসের কোন সুবিধা নিয়েও হাজির হয়নি ঐ বাড়ীতে, যদি পাছে লোকে কিছু বলে।কিন্তু আজ সমস্যাটা তার নিজের ঘরে এসে হাজির, তাও আবার এই রাতের অন্ধকারে।খালেদের মনে হচ্ছিল কূলে এসে তরী ডোবার মত বিপদসংকেত; যদি কেউ দেখে ফেলে তো সব শেষ।তবু মাথা ঠান্ডা রেখে খালেদ বলল

-হু, তো বলুন কি করতে পারি আমি?
-পাড়ার মানুষের মুখে যা শুনি, আপনার মত মানুষ নাকি খুব কম পাওয়া যায়।আপনি নাকি ফেরেশ্তার মত মানুষের উপকার করেন।আমারও একটা উপকার করতে হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে একটা পাপ করতে হবে।

-কিন্তু আমি তো আপনারমতো কারোর জন্য উপকারের করতে যেয়ে কোন পাপ করতে পারবো না। তবু বলুন, অন্তত জেনে রাখি আপনার কোন উপকারটা করতে পারলাম না।
-আমি জানি আপনি রাজী হবেন না, কিন্তু রাজী হউন আর নাই বা হউন আমাকেতো তা পেতেই হবে। আমি চাই আমার গর্ভে একটি সন্তান ধারন করতে একজন খুব ভালো মানুষের। যাকে নিয়ে আমি বেঁচে থাকতে চাই অমার মত করে।যদিও সন্তান গর্ভে নেওয়া আমার জন্য কোন ব্যাপারই না। কিন্তু আমি জানি আমি যাদের সন্তান খুব সহজে নিতে পারি তারা কোন মানুষের মধ্যে পড়ে না। আর আমি এমন কোন মানুষের সন্তান কে মাতৃস্নেহে বড় চাই না।

কথা গুলো শুনতে শুনতে খালেদের মাথায় যেন বজ্রপাত হবার মত অবস্হা। এমন কথা কোন মহিলা যে এতটা সহজে বলে ফেলতে পারে সেটা সে কখন ও ভাবেনি।আর তা শোনার জন্যও একজন পুরুষের যে মানসিকতার জোর লাগে তার কোনটাই ছিল না তার কাছে।

-আমি খুব দুঃখিত যে আমার পক্ষে ওরকম কোন উপকার করা সম্ভবপর নয়।
-আমি শুধুমাত্র একটি সন্তান চাই, কখনও তার পরিচয় আপনাকে দিতে হবে না। শুধুমাত্র একটি ভালো মানুষের সন্তান আমি গর্ভে নিতে চাই।
-এত ভালো মানুষ থাকতে আমার এই কাজটি করতে হবে কেন?
-আমি ভালোমানুষদের সম্পর্কে খুব কম জানি, কারণ তারা আমার কাছে আসে না। আমি মনুষের মুখেমুখে শুনে যতটা চিনেছি তাদের মধ্যে আপনি একজন।

খালেদের কথা গুলো শুনতে শুনতে ধৈর্য্যর বাঁধ যেন ভেঙ্গে যাচ্ছিল।তার মনে হচ্ছিল খারাপ ব্যবহার করে এর থেকে নিস্তার পাওয়া যাবেনা।
-দেখুন আমাকে মাফ করবেন। আপনি অনেককে পাবেন হয়ত তারা আপনার শর্ত মেনে নিবে। কিন্ত আমার পক্ষে সম্ভব নয়।আপনি বসতে পারেন। কেউ আপনাকে এখানে দেখে ফেললে আমার সম্মানের আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
-আপনি যে সম্মান রক্ষার চেষ্ঠা করছেন, আমাকে আমার প্রাপ্য না দিলে তা এমনিতেই আপনাকে হারাতে হবে।
-আপনি কি বলতে চাইছেন?
-আমাকে সন্তান দিলে, সেটা শুধুমাত্র আমি আর আপনিই জানবো, আমাদের সন্তান ও কোনদিন জানবে না। কিন্তু সেটা না হলে সবাই কে জানাবো, আপনিই আমাকে এখানে ডেকে পাঠিয়েছেন।এই চামেলী যেটা চায়, সেটা সে যেকোন ভাবেই পাবে।

সব কথা গুলো খালেদকে ধীরে ধীরে জ্ঞানহীন করে তুলছিল, সে ঠিক বুঝছিল না আসলে সে কি করতে পারে। অবশেষে চামেলীকে নিবৃত্ত করার জন্য সে বলল
-আমাকে একটু ভাবার সময় দিতে হবে।
-সেটা আমি দিতে পারি, তবে কোন না শোনার জন্য নয়। আমি আগামীকাল আবার আসব আমার প্রাপ্য বুঝে নিতে।
খালেদ কিছু বলার আগেই চামেলী বেড়িয়ে গেল। খালেদের ধাতস্হ হতে কিছু সময় লাগল। সে বুঝতে পারল এখানে থাকা আর নিজের বিপদকে নিমন্ত্রন করা একই কথা। সেই রাতেই সে রওনা দিল বাড়ীর উদ্দেশ্য।

কথা গুলো মনে হতে না হতেই,খালেদের সুখের ভুবনের প্রিয়তমা স্ত্রী হঠাত্ এসে বলল
-গতপরশু যারা নীলুকে দেখে গেল, ওরা ফোন দিয়েছে। তোমার সাথে কথা বলতে চায়।

খালেদের সামনে বসে থাকা ছেলেটকে দেখে বলল
-ও, তুমি ব্যস্ত বুঝি। ওদের তাহলে বলে দিই, তুমি পরে কথা বলবে।
খালেদ কোন কথা বলার আগেই, সে চলে গেল।খুব দ্রুত এসে বলল
-উনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না।

শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১০

একটি ‌না-কবিতা



তিমিরাচ্ছন্ন বন্দীঘরেও নিজেকে খুঁজে,
পাই মনোপূত সর্বত্র বিচরণের স্বাধীনতা।
তীব্র অন্ধকারেও উজ্জ্বল আমার সমগ্র হৃদয়,
পাই আমি, আমার আত্মার খোঁজ-

মূল্যহীন এই আমি, আমার অমূল্যসম;
কত কথা হয় বিনিময়, একাকার দুজন
ভাবলেশহীন আত্মা আর স্পর্শকাতর হৃদয়।

ক্ষরিত হৃদয় ফিরে আসে,প্রতিবারেরই মত;
আত্মা সব ধরে রাখে,থাকে নির্বাক-
প্রতীক্ষার প্রহরান্তে সবই হবে ঠিকঠাক।।।।

মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০১০

ফুলের জন্ম

আমার ফুল হয়ে জন্মাটাই হয়ত সব থেকে বড় ভুল হয়েছে
সত্যি বলছি, মানুষেরা আমার যতটা গুনকীর্তি করে-
আসলে তারা সেটার এক আনাও বিশ্বাস করে না।
জন্মটাই বৃথা, বার বার হতে হয় আমাকে কালের স্বাক্ষী
বলুন, আর কত পারি? মানুষের এত অভিনয় সহ্য করতে!

মানুষের কথা আমাকে একটু বেশীয় ভাবায়
আমাকে নিয়ে যে আহ্লাদে ন্যাকামী তারা করে
আর করে যত মিথ্যা অভিনয়, আর কেউ সেটা করে না।
সহ্যকরাটাই যেন আমার কাজ,শুধু মেনে নিতে হয়-

আমার আগমনটা খুব ক্ষনিকের জন্যই হয় ধরনীতে
সেই যে ভোর বেলাতে সুবাতাস নিয়ে আগমন
সেটাই আমার কাল
সুন্দর মুখশ্রী, আর সুবাতাস এই দুই যম
জন্মলগ্ন থেকেই ওত পেতে থাকে মৃত্যুলগ্নের।
নিত্যদিনের জীবনকাল ক্ষনিকের হলেও
মনুষ্য অভিজ্ঞতা আমাকে করছে নিরাশ;
তারা করে না বিশ্বাস যেটা তারা বলে
কেউ তারা আমাকে নিজের জন্য নেয়না,
আমাকে ব্যবহার করে জন্য তাদের অপূর্নতা ঢাকার।

কোথায় তারা নেয় না আমকে বলতে পারেন?
জন্মদিনের আনন্দ, বাসরের স্বপ্ন জালের বুনন স্বাক্ষী
কিংবা মৃত মানুষের অন্তিম যাত্রা, সব খানেই মানুষ
সঙ্গী করেছে; আমাকে কেন?
তাদের অব্যক্ত ভাষা আমাকে বানিয়েছে।
কত ঘৃনা, ছলনা কিংবা চাতুরী ঢেকেছে
আমাকে ছিটিয়ে, তাদের ইচ্ছামত-
তবু নিজেরা পাল্টেনি সামান্যটুকু
আমার যমেরা আমাকে মৃত্যুর কাছে
সঁপে দিয়ে হয়েছে লাপাত্তা।
আসলে ঐ যম দুটোই আমার জীবন
তাদের প্রস্হানই আমার সমাপ্তি;
প্রস্তুতি নেওয়া নতুন করে ভাষার সম্পূরক হবার।

শুক্রবার, ১৪ মে, ২০১০

ফুলের অলি

কত ফুলের অলি হতে মন চেয়েছে
তার ইয়ত্তা কি কেউ রাখে!
কেউ রাখে না, তবে রয়ে যায় কিছু কিছু-
মনের কোঠরে, ওলিকে তাড়া করে পিছু পিছু।

সেই যে শুরু সেই ছোট্টটি থেকে
তখন শুধু লাগত ভালো দেখতে,
চাইনি তুলে রাখতে কখনও নিজের কাছে।
ওলি বড় হল, এখন শুধু দেখতে ভালো লাগা নয়
জানাতে হবে ফুলকে, তোমার গন্ধ নিতে চাই।

ওলির চলার পথে অসে নানান ফুল
কারো চোখ, কারো ঠোঁঠ কারো বা ভালো লাগে চুল;
ফুলকে শুধু জানিয়ে শেষ নয়
যেকোন ভাবে তাকে কাছে পেতে চায়।

পেল কাছে ওলি তাকে,রয়ে যায় পাশে পাশে,
অসলে বন্দীদশায় ;ওলি বলে তবু ভালোবাসি তোমায়

তারপরেও কত ফুল, করে ইচ্ছা করি ভুল,
ওলি তবু থাকে নিশ্চল।
বন্দীদশায় ঘোরে ওলি, ঘরে যে আছে তারও কুড়ি
আশেপাশে নবওলি করে উড়াউড়ি।

বুধবার, ১২ মে, ২০১০

তবুও চাকা ঘোরাতে হবে

পাদুটো যায় ভেঙ্গে, মুখটা ভেজা ঘামে
তবুও চাকা ঘোরাতে হবে, পথের ডানেবামে,
হায়রে কপাল! বিশ্রামরও পায় না তারা ভাগ
পৃথিবীতেই বেঁচে থাকা, মনে হয় যেন পাপ।

পরনের কাপড়ই সাথে থাকে, গ্রীষ্ম কিবা বর্ষা
মাথার উপরের খাখা রোদ্দুর কিবা কনকনে ঠান্ডা,
শত কষ্ট শত অবিচার জমা হয় প্রতিদিন
তবুও চাকা ঘোরাতে হবে, শোধরাতে হবে ঋণ।

হয়না খাওয়া পেটটি ভরে, জমাতে হবে টাকা
ছেলেমেয়ের মুখটা ভেসে ওঠে‌
খাওয়া হবে, পাঠালে টাকা শহর থেকে ওদের বাবা।
চোখে চলে আসে পানি, করেনি ক্ষমা বিধাতা ওদেরও
টানতে হবে বাপেরই মতনই, জীবন পাপের ঘানি।

সময়ের সাথে দাড়ি চুলে ধরে পাঁক
আর যে পারেনা শরীর, মন বলে এবার থাক।
তবুও অভাব করে না ক্ষমা, সন্তানেরা নেই সাথ
কেউতো নেই দেবে বিশ্রাম, দুখের নেবে ভাগ।

পাদুটো যায় ভেঙ্গে, মুখটা ভেজা ঘামে
তবুও চাকা ঘোরাতে হবে, পথের ডানেবামে।

মঙ্গলবার, ১১ মে, ২০১০

স্বপ্নকন্যা

আমি বুঝিনা স্বপ্নকন্যা কে,
একটিবারও ডুবতে পারিনি তার রূপের বন্যাতে;
কে জানে স্বপ্নকন্যা কে?

স্বপ্নকন্যা খুঁজতে যেয়ে
পাইনি নতুন কারোর দেখা,
এসেছে বারবার ফিরে
পাশের বাড়ীর নিলু
অথবা সহপাঠী শশীর কথা।

স্বপ্নকন্যা নাকি স্বপ্নে আসে!
স্বপ্নেতেই বসবাস।
কেউ আসেনি স্বপ্নে আমার,
তার জন্য মন করে ফিঁসফাঁস।

স্বপ্নকন্যা দেয়না দেখা
নেয়না কোন খবর,
নীলু শশীও দিনে দিনে
হচ্ছে আমার উপর বেজাড়।

স্বপ্নকন্যা, তুমি নির্মম
থাকযে সবারই মরমে;
আমি চাই না, বুঝতেও চাইনা
কে জানে স্বপ্নকন্যা কে?

শনিবার, ৮ মে, ২০১০

স্বপ্ন দেখতে ভয়

আমার স্বপ্ন দেখতে বড্ড বেশী ভয় হয়,
হাই কন্ট্রাস্টের রঙ্গীন স্বপ্নগুলো
বাস্তবায়নের পর শুধুই ধূসরময়‌‌
স্বপ্ন দেখতে সত্যি বলছি বড্ড ভয় হয়।

কুঅভ্যাসটা কোনমতেই ছাড়েনা কেন যে পাছ,
সেই ছোট্ট থেকেই শয়তানগুলো থাকে সাথ সাথ।
মায়ের কোলে সেই যে শুরু স্বপ্ন দেখার খেলা
মিথ্যা স্বপ্ন হয়নি সত্য;
জোটেনি চাঁদের টিপ কপালে আমার
জন্য একটি ছোট্ট বেলা।

বয়সের সাথে স্বপ্ন কতযে এসেছে নতুন রূপে,
ভেবেছি করব কতনা কিছু, বাস্তবে সবই ফিঁকে।
স্বপ্ন! তুমি যে শুধুই স্বপ্ন, বড়ই বেদনাময়
স্বপ্ন দেখতে সত্যি বলছি বড্ড ভয় হয়।

বুধবার, ৫ মে, ২০১০

www.galpojockey.com

একটি গল্প কিছুক্ষন পড়ার পর কতবার যে মনে হয় যদি গল্পের পরের টুকু আপনার ইচ্ছেমত চলত তাহলে আপনি নতুন কিছু করতেন; আপনার প্রিয় চরিত্রটাকে চালাতেন আপনার ইচ্ছানুযায়ী। সবারই কিছু কিছু চরিত্রকে পুরোপুরি পাল্টে ফেলতে মন চায়, গল্পের মোড় ঘোড়াতেও মন ছটফট করে।
আর এরকমেরই উদ্যেগ নিয়ে সম্পূর্ন নতুন ভাবে আসছে আপনাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত গল্পের আড্ডা

গল্পজকী

চোখরাখুন:[link|http://www.galpojockey.com|Galpo Jockey]

বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১০

নতুন বছর আসে আর যায়

নতুন বছর আসে আর যায়
অতিউৎসাহ নিয়ে বরণ করা হয় নববর্ষ
নতুন ভাবে দেখা দেয় কত পরিকল্পনা
বছর শেষে ওগুলোর হদিশ রাখে কে?
তবুও করি নতুন চিন্তা,
নতুন বছর আসে আর যায়‌


২৫ নববর্ষ এল, বুঝতে বুঝতে চলে গেল ১০
বুঝলাম যখন, কত সাবধানতা
১লা দিনটি যেভাবে যাবে,
গোটা বছর কাটবে সেভাবে;
কোনমতেই কোন বিপদ ঘটানো যাবে না
বাবা মার ধমক, দাদার হাতের মার
শিক্ষকের বকুনী কোনটিই নয়।
শুধু খাব হালখাতার মিষ্টি, পাব মায়ের আদর
থাকবে পরণে নতুন কাপড়।

একসময় নববর্ষ নিয়ে এল নতুন একটি দিন
মনের ভিতর যেদিন বসন্তের হাওয়া বয় হু হু করে
বৈশাখী মেলা।, আসলেই মেলা পরীদের সমাহার
বছরের ১লাতে, শুধু পরী আর পরী
বৈশাখের হাওয়া পরীদের গন্ধ দেয় গায়
কোন এক পরীর গন্ধ যায়না কিছুতেই
বাড়ী ফিরার হযেছে সময়;
নববর্ষ সেতো আসে আর যায়

নববর্ষের সুবাসটা আমি টের পাই
কেমন যেন একটা মিশেল সুবাস,
অনেক কিছু মিলেমিশে একাকার বুঝতে পারি
পারিনা অনুভব করতে আগের মতন।

বটের হাওয়া পায়, শুনতে পারি মেলার গমগম শব্দ
আমার পরী এখন আর আসেনা, বুঝতে পারি না কি করা উচিত;
ভাবি সামনে বর্ষা, ঘরের চালটা থেকে রাতে চাঁদ দেখা যায়;
বোনটাও বেড়ে উঠেছে, ওর বিয়ে দিতে হবে
বাবর ঔষধ, মার পুরনো শাড়ীটাও না থাকার মতন
দোকানে বাকীর খাতায় অনেক গুলো পাতা আমারই দখলে
মিষ্টি নিতে হলে টাকা দিতে হবে

আগের পরিকল্পনাগুলোতো সবই ব্যর্থ
তবুও করি নতুন চিন্তা
নতুন বছর আসে আর যায়
কত উৎসাহ নিয়ে বরণ করা হয় নববর্ষ